ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫ , ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বর্ষার দূত কদম ফুল সৌন্দর্য, স্মৃতি আর সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি


আপডেট সময় : ২০২৫-০৬-১৬ ২২:০৪:৫৯
বর্ষার দূত কদম ফুল সৌন্দর্য, স্মৃতি আর সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি বর্ষার দূত কদম ফুল সৌন্দর্য, স্মৃতি আর সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি
 
তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর : বর্ষা এলেই প্রকৃতির পরতে পরতে যে ফুলটি নীরবে জানান দেয় তার আগমন, সেটি হলো কদমফুল। বাংলাদেশের চারিত্রিক প্রকৃতির বর্ষা ঋতুকে স্বাগত জানানোর এক অনন্য প্রতীক হয়ে উঠেছে এই ফুল। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকালের প্রতিটি দিনে কদমফুল তার রঙ, ঘ্রাণ ও উপস্থিতিতে মাতিয়ে রাখে প্রকৃতিকে।
 

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে রাস্তার পাশে কিংবা বাড়ির আনাচে-কানাচে উঁকি দিচ্ছে অসংখ্য কদমগাছ। তার শাখা-প্রশাখায় সাদা-হলুদের মিশেলে ফুটে উঠেছে মনকাড়া কদমফুল। সবুজ পাতার আড়ালে লুকানো এই ফুলগুলো দেখে থমকে যাচ্ছেন পথচারীরা। যেন একটুকরো কবিতার মতো প্রস্ফুটিত হয়েছে প্রকৃতির বুকে।
 

শুধু সৌন্দর্যই নয়, গ্রামীণ জীবনে কদমফুল ছিল একসময় খেলার সরঞ্জাম। ছোটরা ফুলের ভেতরের গোল অংশ দিয়ে বল বানিয়ে খেলতো, কানে গুঁজে হাঁটতো মাঠে-ঘাটে। এখনও কিছু এলাকায় দেখা যায় শিক্ষার্থীরা হাতে কদমফুল নিয়ে বিদ্যালয়ের পথে রওনা দিয়েছে। মেয়েরা খোঁপায় গুঁজছে কদমফুল, তরুণ-তরুণীরা প্রিয়জনকে দিচ্ছে প্রেমের বার্তা হিসেবে।
 

কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ভাদার্ত্তী দক্ষিণপাড়া গ্রামের প্রকৃতি প্রেমিক মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, “ছোটবেলায় কদমফুল ছিল আমাদের খেলার অন্যতম অনুষঙ্গ। এখন সেই কদমগাছ আর দেখা যায় না। কদমফুল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় না, এমনকি ব্যক্তিগত উদ্যোগও খুব কম দেখা যায়।”
 

তিনি আরো বলেন, “এই গাছ দ্রুত বড় হয় এবং কাঠ নরম হওয়ায় এটি জ্বালানি কাঠ হিসেবেও খুব উপযোগী। তাই ব্যক্তি ও সরকারি উদ্যোগে এর রোপণ বাড়ানো উচিত।”
 

কালীগঞ্জে নদী ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের নেতৃবৃন্দরা জানান, বর্ষা মানেই কদমফুল। এই ফুল শুধু একটি ঋতুকে নয়, আমাদের শৈশব, স্মৃতি, প্রেম, প্রকৃতি এবং সম্ভাবনাকে একসঙ্গে ধারণ করে। কদমগাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনক ভাবে কমে যাওয়ায় এ ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। সময় এসেছে এই গাছকে ভালোবাসার, রোপণের এবং নতুন প্রজন্মের কাছে এর মায়াময় গল্পগুলো পৌঁছে দেওয়ার।

 
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, “কদমফুল শুভ্রতার প্রতীক। এটি বর্ষা মৌসুমে বাঙালির মনে ভিন্নধর্মী আবেগ সৃষ্টি করে। কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় কদমফুলের উল্লেখ রয়েছে। এটি প্রকৃতির সঙ্গে আত্মিকভাবে যুক্ত।” তিনি জানান, কদম গাছের কাঠও অনেকভাবে ব্যবহারযোগ্য।
 

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তনিমা আফ্রাদ বলেন, “ছোটবেলায় আমাদের খেলার অন্যতম অংশ ছিল কদমফুল। এখন আর আগের মতো দেখা যায় না। তাই কদম গাছ সংরক্ষণ ও পুনঃরোপণের জন্য স্থানীয় কৃষি বিভাগকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা আছে।




 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ